গরুর ইজারা
জিজ্ঞাসা : আমাদের একটি গরু আছে। আমরা এবছর কোনো চাষাবাদ করছি না। অন্য এক লোক আমাদের গরুটি নিয়ে তার গরুর সাথে জুড়ে হালচাষ করে। আমরা শর্ত দিয়েছি, আমাদের গরুটি যতদিন নেওয়া হবে প্রতিদিন পঞ্চাশ টাকা করে দিতে হবে। জানতে চাই এ টাকা গ্রহণ করা আমাদের জন্য বৈধ হবে কি না?
আব্দুল্লাহ নোমান, সদর টাঙ্গাইল
জবাব : হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে গরু চাষাবাদের জন্য দিয়ে টাকা গ্রহণ করা বৈধ হবে।
হেদায়া ৩/২৮৩, ফাতাওয়া আলমগিরি ৪/৪৪০
ইসলামি সঙ্গীতানুষ্ঠান
জিজ্ঞাসা : শরীয়তের দৃষ্টিতে ইসলামি সঙ্গীতানুষ্ঠানের হুকুম কী? দলীল প্রমাণের আলোকে জানতে চাই।
সুহাইল আহমেদ, নোয়াপাড়া যশোর
জবাব : ইসলামি সঙ্গীত অর্থাৎ হামদ নাতের অনুষ্ঠান নিুোক্ত কিছু শর্ত সাপেক্ষে বৈধ। যথা- ১. হামদ নাত পরিবেশনকারী ফাসেক অর্থাৎ পাপাচারী কিংবা মহিলা না হতে হবে।
২. ইসলামি সঙ্গীতের বিষয়বস্তু শরিয়ত বিরোধী না হতে হবে।
৩. কোনো ধরণের বাদ্যযন্ত্র কিংবা শরীয়ত বিরোধী কাজ না থাকতে হবে এবং অন্যের ইবাদত যেমন, তিলাওয়াত ও জিকিরে কোনো ব্যঘাত সৃষ্টিকারী না হতে হবে।
তাবিজ ব্যবহার
জিজ্ঞাসা : ক. তাবিজ দিয়ে চিকিৎসা নেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে কতটুকু বৈধ?
খ. তাবিজ দিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মহব্বত সৃষ্টি করা যাবে কিনা?
হাসান আল মামুন, নারায়নগঞ্জ
জবাব : ক. একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই সমস্ত কিছু করতে পারেন। তিনিই রোগদাতা এবং তিনিই রোগ থেকে মুক্তি দান করেন । অন্তরে এ বিশ্বাস রেখে শুধুমাত্র চিকিৎসা হিসেবে অসিলাস্বরূপ শরিয়তসম্মত তাবিজ দ্বারা চিকিৎসা প্রদান করা ও গ্রহণ করা জায়েয আছে। কেননা নবী করীম সা. ও সাহাবাগণ থেকেও বিষয়টি প্রমাণিত আছে। তবে কেউ যদি তাবিজ সর্ম্পকে এ ধারণা পোষণ করে যে, তাবিজের মধ্যে রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা কিংবা বিপদ থেকে রক্ষা করার স্বকীয় ক্ষমতা রয়েছে। অথবা তাবিজ অবৈধ কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়, বা তাবিজে কুফুরী বাক্য ব্যবহার করা হয়, তাহলে এ সকল অবস্থায় তাবিজ ব্যবহার করা জায়েয হবে না।
খ. হ্যাঁ, উপরোক্ত শর্তসমূহ ঠিক থাকলে বৈধ হবে।
বুখারি শরিফ ২/৮৫৪
মাসিক বন্ধ রেখে রোজা রাখা
জিজ্ঞাসা : মহিলারা যদি রমজান মাসে কোনো ওষুধ সেবনের মাধ্যমে ঋতুস্রাব বন্ধ রাখে তাহলে ওই দিনগুলোতে রোজা রাখতে পারবে কি? এবং এতে রোজার কোনো ক্ষতি হবে কি?
ওয়ালী উল্লাহ, মোমেনশাহী
জবাব : ঋতুস্্রাব মহিলাদের একটি স্বভাবজাত বিষয় এবং ধারাবাহিক ঋতুস্্রাব আসা তাদের সুস্বাস্থ্যের কারণ। এর ব্যতিক্রম ঘটলে মহিলাদের স্বাস্থ্যেরে জন্য ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই রোজা কিংবা অন্য কোনো ইবাদত নির্বিঘেœ পালনের লক্ষ্যে ঔষধ সেবনের মাধ্যমে ঋতুস্্রাব বন্ধ রাখা ঠিক নয়। তারপরও যদি কোনো মহিলা রমজানে ঔষধ সেবনের মাধ্যমে বন্ধ রাখে, তাহলে ওই দিনগুলোতে তাকে রোজা রাখতে হবে এবং এতে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। আল বাহরুররায়েক ২/৪৪৯
তালাকের জন্য সাক্ষি
জিজ্ঞাসা : মুখে তালাক দেওয়ার সময় সাক্ষি রাখা জরুরি কি না? মোবাইল ফোনে তালাক দিলে তা শরিয়তসম্মত হবে কি না? অথবা তৃতীয় কোনো ব্যক্তি উপস্থিত না থাকলে শুধুমাত্র স্বামী-স্ত্রী মুখোমুখি হয়ে তালাক দিলে তা কি তালাক হবে?
আব্দুল্লাহ আল নোমান, গাজীপুর
জবাব : তালাক প্রদানের জন্য সাক্ষি রাখা জরুরি নয়। মোবাইলে তালাক দিলে তা কার্যকর হবে।
ফাতাওয়া আলমগিরি ১/৩৭৯
মুরাদাবা প্রসঙ্গে
জিজ্ঞাসা : এক প্রবাসী আমাকে মুরাদাবার ভিত্তিতে ব্যবসা করার জন্য ৫০ হাজার টাকা দিবে বলেছিলেন। অন্যদিকে তিনি ধান প্রদানের শর্তে কিছু লোককে ঋণ দিয়েছিলেন। এখন তিনি আমাকে বলছেন যে- ঋণ গ্রহিতাদের নিকট থেকে ধান উসুল করে তা বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে নিন। জানতে চাই এভাবে মুরাদাবার মূলধন নেওয়া বৈধ হবে কি না?
মোহা. আব্দুল্লাহ আল ফাহাদ, নাটোর
জবাব : হ্যাঁ, মুদারাবার অন্যান্য শর্ত ঠিক থাকলে এভাবে মূলধন নেওয়া বৈধ হবে।
মাবসুত ২২/২৯
মহিলাদের নামাজ
জিজ্ঞাসা : ঘর-বাড়িতে মহিলারা যখন নামাজ পড়ে তখন সেখানে অধিকাংশ সময় মাহরাম আত্মীয়-স্বজন ছাড়া অন্য কেউ থাকে না। তখনও কি তাদের ওপর পুরো শরীর ঢেকে নামাজ পড়া জরুরি?
আশরাফুল আলম, ফরিদপুর
জবাব : মহিলাদের নামাজের স্থানে মাহরাম ব্যতীত অন্য কেউ না থাকলেও তাদের মুখমণ্ডল, উভয় হাত ও পায়ের টাখনুর নিচের অংশ ব্যতীত বাকি সমস্ত শরীর ঢেকে রাখা ফরজ।
আল মুহিতুল বুরহানি ১/৩৯১
তাওয়াফে জিয়ারত
জিজ্ঞাসা : জনৈক ব্যক্তি হজ আদায়ের জন্য মক্কা মুকাররমায় গমন করে এবং আল্লাহর অনুগ্রহে হজের কার্যাবলী যথাযথভাবে সম্পন্ন করে। কিন্তু শেষ পর্যায়ে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে। যার কারণে আইয়্যামে নহর তথা জিলহজের ১০, ১১, ১২ তারিখে তাওয়াফে জিয়ারত আদায় করতে পারেনি। জানার বিষয় হলো- তাওয়াফে জিয়ারত কি আদায় করা জরুরি? না এর পরিবর্তে দম দিলেই যথেষ্ট হবে? আর তাওয়াফের নির্ধারিত সময় থেকে বিলম্বে আদায় করলে দম দেওয়া ওয়াজিব হবে কি?
মুনির হুসাইন, কিশোরগঞ্জ
জবাব : তাওয়াফে জিয়ারাত হজের অন্যতম রোকন। তাওয়াফে জিয়ারাত আদায় করা ছাড়া হজ হয় না। এমনকি এর পরিবর্তে দম দিলেও যথেষ্ট হবে না। তবে ওজরবশত তাওয়াফে জিয়ারাত নির্ধারিত সময় থেকে বিলম্বে করা যায়। সেক্ষেত্রে দম দিতে হবে না। কিন্তু কোনো ওজর ছাড়া তাওয়াফের নির্ধারিত সময়ে তা আদায় না করলে দম দেওয়া ওয়াজিব হবে।
ফাতাওয়া শামি ২/৫৫৫
দালালী প্রসঙ্গে
জিজ্ঞাসা : ১. কিছুদিন পূর্বে আমার এক বন্ধু তার কিছু জায়গা আমাকে বিক্রি করে দিতে বললো। কত টাকায় বিক্রি করবো এর একটা পরিমাণও বলে দিলো। পরে বললো এর চেয়ে বেশি টাকায় বিক্রি করতে পারলে বেশি টাকাগুলো আপনার। প্রশ্ন হলো আমি কি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে পারবো এবং বেশি টাকাগুলো আমি নিতে পারবো?
২. আর যদি সে মূল্য নির্দিষ্ট করে দেয় এবং বেশি বিক্রি করতে পারলে বর্ধিত অংশ আমার, একথা না বলে এবং আমি তা করি- তাহলে এর হুকুম কী?
মুহাম্মাদ আতাউল্লাহ, সাভার, ঢাকাজবাব : ১.২. প্রশ্নোক্ত উভয় ক্ষেত্রে আপনি বেধে দেওয়া নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে বিক্রি করতে পারবেন। তবে সেই অতিরিক্ত মূল্যের মালিক আপনার বন্ধু। আপনার জন্য তা বৈধ নয়। আর আপনার সাথে আপনার বন্ধুর কৃত চুক্তিটি না জায়েয ও ফাসিদ হয়েছে। এক্ষেত্রে আপনি আপনার শ্রমের ন্যায্য পারিশ্রমিক পাবেন। তবে কমিশন হিসেবে প্রথমে কিছু টাকা নির্ধারণ করে অত:পর এমন বলা যেতে পারে যে, যদি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশিতে বিক্রয় করতে পারো তাহলে তা তুমি পুরস্কার হিসেবে পাবে।
ফাতাওয়া আলমগিরি ৪/৪৫১
সুরা ফাতেহা
জিজ্ঞাসা : কোনো ইমাম যদি এশার নামাজে ভুলে নি:শব্দে কেরাত পড়া শুরু করে এবং সুরা ফাতেহা শেষ করার পর তার স্মরণ আসে । তাহলে এক্ষেত্রে তার করণীয় কী? সেকি সালাম ফিরিয়ে নতুন করে নামাজ শুরু করবে? নাকি যতটুকু পড়েছে তার পর থেকে জোরে পড়বে? নাকি শুরু থেকে আবার জোরে পড়বে?
আশফাক, ফরিদপুর
জবাব : প্রশ্নোক্ত অবস্থায় ইমাম সাহেব নামাজ ভেঙ্গে ফেলবে না। বরং যে পরিমাণ কিরাত নি:শব্দে পড়েছে তার পর থেকে বাকি কিরাত উচ্চস্বরে পড়বে এবং নামাজ শেষে সিজদায়ে সাহু করবে।
আন নাহরুল ফায়েক ১/৩২৫
মসজিদে একা নামাজ পড়লে ইকামত
জিজ্ঞাসা : আমি জানি যে, একাকি নামাজ পড়লে ইকামত দেওয়া উত্তম। জানার বিষয় হলো, মসজিদে একাকি নামাজ পড়ার সময়ও কি একামত দেওয়া উত্তম। এ বিষয়ে শরিয়তের বিধান কী?
আব্দুল কাদের, ঢাকা
জবাব : মসজিদে একাকি নামাজ পড়লে ইকামত দেওয়া মাকরূহ
আদ দুররুল মুখতার ১/৩৯৫
মৃতের পক্ষ থেকে বদলি হজ
জিজ্ঞাসা : জনৈক ব্যক্তি হজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে এ বছর হজ এজেন্সীর কাছে টাকা জমা করেছিলেন। গত সপ্তাহে হঠাৎ তার ইন্তেকাল হয়ে যায়। তার পক্ষ থেকে বদলি হজের জন্য প্রেরণ করা জরুরি কি না? ওয়ারিসগণ কাউকে দিয়ে বদলি হজ না করিয়ে এ টাকা নিজেরা নিতে পারবে কি না? প্রকাশ থাকে যে, মৃত ব্যক্তি হজ করার ব্যাপারে কোনো ওসিয়ত করে যায়নি।
আমিনুল ইসলাম, বানিয়াচং, হবিগঞ্জ
জবাব : প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু মৃত ব্যক্তি হজ করার ব্যাপারে কোনো অসিয়ত করে যাননি, তাই তার পক্ষ থেকে ওয়ারিশগণের ওপর কাউকে দিয়ে বদলি হজ করানো জরুরি নয়। বরং তার উক্ত টাকা এখন মিরাছ হিসাবে বণ্টন হবে। উল্লেখ্য, যদি ওই ব্যক্তির ওয়ারিছদের মধ্যে কেউ অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকে, তাহলে তার প্রাপ্ত অংশ থেকে বদলি হজে ব্যয় করা বৈধ হবে না।
ফাতাওয়া আলমগিরি ১/২৫৭
মুসাফিরে নামাজ প্রসঙ্গে
জিজ্ঞাসা : এক মুসাফির মুকিম ইমামের পিছনে নামাজ শুরু করার পর ভেঙে ফেলে। এখন তার করণীয় কী?
মাহিদ হাসান, লাকশাম
জবাব : প্রশ্নোক্ত মুসাফির ব্যক্তি পরবর্তীতে ওই নামাজ আদায় করলে দুই রাক‘আত পড়বে।
আহসানুল ফাতাওয়া ৪/৮০
কুরবানির পশুর চামড়া চুরি হয়ে গেলে
জিজ্ঞাসা : গত কুরবানিতে পশুর চামড়া বিক্রিত টাকা দান-সদকা করার পূর্বেই বাসা থেকে চুরি হয়ে যায়। তখন কেউ বলে ওই পরিমাণ টাকা আবার দান করতে হয়ে। আবার কারও মত হলো নতুন করে টাকা দিতে হবে না। জানার বিষয় হলো, কুরবানির পশুর চামড়ার বিক্রিত টাকা চুরি হয়ে গেলে তার হুকুম কী?
ইমরান চৌধুরী, নেত্রকোণা
জবাব : কুরবানির চামড়া বিক্রিত টাকা সদকা করা ওয়াজিব। আর প্রশ্নোক্ত চামড়ার টাকা দান করার পূর্বে চুরি হয়ে যাওয়ায় ওয়াজিব আদায় হয়নি। তাই আপনাকে ওই পরিমাণ টাকা দান করতে হবে।
আল বাহরুর রায়েক ২/৩৬৯জাকাত প্রসঙ্গে
জিজ্ঞাসা : আমার এক চাকুরিজীবী বোন আছে। সে মাসে যে বেতন পায় তা থেকে প্রতিমাসে এক হাজার টাকা ডি,পি এস ফাণ্ডে জমা রাখে। এখন তাতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা জমা হয়েছে। এবং তার কাছে তিন ভরি স্বর্ণ আছে। জানার বিষয় হলো, তার এ সম্পদের ওপর জাকাত আসবে কি না? যদি আসে তাহলে কত?
হাসান ইবনে মুহাম্মদ, গাজিপুর
জবাব : হ্যাঁ, আপনার বোনের উক্ত সম্পদের ওপর জাকাত আসবে। তার ডি. পি. এস ফান্ডের টাকার সাথে স্বর্ণের মূল্য যোগ করে পূর্ণ টাকার ২.৫০% জাকাত হিসেবে প্রদান করতে হবে। হেদায়া ১/১৭৪
জাকাত প্রসঙ্গে
জিজ্ঞাসা : আমি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করি। মাসিক বেতন ৯৫০০/-। আমি পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে সংসারের দায় দায়িত্ব আমার ওপর। আমার পরিবারের সদস্য সংখ্যা মোট ৮ জন। অতি কষ্ট করে চলেও আমার প্রতি মাসে সাংসারিক খরচ মোট ২০,০০০/- প্রতি মাসেই আমাকে কষ্ট করে চলতে হচ্ছে। ঋণ করে সংসার চালাতে হচ্ছে। ছোট ভাই বোনদের পড়াশোনার খরচ দিতে হচ্ছে। আমার উল্লেখযোগ্য কোনো সম্পদ, ভূমি বা স্বর্ণও নেই। বর্তমানে কোনো ঋণ নেই। ব্যক্তিগত কোনো ঘর নেই। অথচ ব্যক্তিগত ঘর করা প্রয়োজন। আমার ব্যাংক ব্যালেন্স আছে ৩১,০০০/-। এমন পরিস্থিতিতে আমি কোনো ধনি ব্যক্তি থেকে যদি জাকাত গ্রহণ করি তাহলে জায়েজ হবে কি? অথবা ধনি ব্যক্তি যদি আমকে ইচ্ছাকৃতভাবে জাকাতের টাকা প্রদান করে তা আমি গ্রহণ করতে পারবো কি? এক্ষেত্রে শরিয়তের বিধান কী?
মুদ্দাচ্ছির আলম, কলাবাগান, ঢাকা
জবাব : প্রশ্নোক্ত বিবরণ দ্বারা বুঝা যায়, আপনি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নন। বিধায় আপনার জন্য জাকাত গ্রহণ করা জায়েয হবে।
আদ দুররুল মুখতার ২/২৫৯পড়ার অযোগ্য কুরআন শরিফের হুকুম
জিজ্ঞাসা : কুরআন শরিফ ও হাদিসের পুরাতন ছেঁড়া পাতা যা পড়ার উপযোগি নয় এগুলো কি করতে হবে? মাটিতে দাফন করে রাখা হবে? না আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিতে হবে? দলিলের আলোকে জানতে ইচ্ছুক। মসজিদ কমিটি, রায়ের বাজার ঢাকা।
জবাব ঃ কুরআন, হাদিস ও অন্যান্য ধর্মীয় পুস্তকাদি ছিঁড়ে গেলে অথবা পড়ার অনুপযোগী হলে সেগুলোর হেফাজতের উদ্দেশ্যে কোনো পবিত্র কাপড়ে পেঁচিয়ে সংরক্ষিত কোনো স্থানে অথবা কবরস্থানের এক কোণে, (যেখানে মানুষ বা জীবজন্তুর চলাচল একেবারেই নেই অথবা খুব কম) মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার ন্যায় দাফন করে দিবে। যাতে এগুলোর মর্যাদাহানী না হয়। এটিই সর্বোত্তম পদ্ধতি।
এছাড়াও এ জাতীয় কপিসমূহকে কোনো ভারী জিনিষের সাথে বেঁধে গভীর পুকুর বা নদীতে ডুবিয়ে দেয়া যেতে পারে। যাতে সেগুলো নদী বা পুকুরের গভীরে পৌঁছে যায়। এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন কোনো অবস্থাতেই এগুলোর অবমাননা না হয়।
আর যদি উল্লেখিত দুটি পদ্ধতি কঠিন হয়ে পড়ে অথবা দাফন করা ও পানিতে ডুবিয়ে দেয়ার পরও পবিত্র কুরআন ও ধর্মীয় কিতাবাদির যথাযোগ্য মর্যাদা রক্ষা না হয়, তাহলে হেফাজতের উদ্দেশ্যে আগুন দ্বারা জ্বালানোরও অবকাশ আছে। জ্বালানোর পর ছাইগুলোকে দাফন করে দেয়া অথবা পানিতে ফেলে দেয়া যেতে পারে।
জিজ্ঞাসা : আমাদের একটি গরু আছে। আমরা এবছর কোনো চাষাবাদ করছি না। অন্য এক লোক আমাদের গরুটি নিয়ে তার গরুর সাথে জুড়ে হালচাষ করে। আমরা শর্ত দিয়েছি, আমাদের গরুটি যতদিন নেওয়া হবে প্রতিদিন পঞ্চাশ টাকা করে দিতে হবে। জানতে চাই এ টাকা গ্রহণ করা আমাদের জন্য বৈধ হবে কি না?
আব্দুল্লাহ নোমান, সদর টাঙ্গাইল
জবাব : হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে গরু চাষাবাদের জন্য দিয়ে টাকা গ্রহণ করা বৈধ হবে।
হেদায়া ৩/২৮৩, ফাতাওয়া আলমগিরি ৪/৪৪০
ইসলামি সঙ্গীতানুষ্ঠান
জিজ্ঞাসা : শরীয়তের দৃষ্টিতে ইসলামি সঙ্গীতানুষ্ঠানের হুকুম কী? দলীল প্রমাণের আলোকে জানতে চাই।
সুহাইল আহমেদ, নোয়াপাড়া যশোর
জবাব : ইসলামি সঙ্গীত অর্থাৎ হামদ নাতের অনুষ্ঠান নিুোক্ত কিছু শর্ত সাপেক্ষে বৈধ। যথা- ১. হামদ নাত পরিবেশনকারী ফাসেক অর্থাৎ পাপাচারী কিংবা মহিলা না হতে হবে।
২. ইসলামি সঙ্গীতের বিষয়বস্তু শরিয়ত বিরোধী না হতে হবে।
৩. কোনো ধরণের বাদ্যযন্ত্র কিংবা শরীয়ত বিরোধী কাজ না থাকতে হবে এবং অন্যের ইবাদত যেমন, তিলাওয়াত ও জিকিরে কোনো ব্যঘাত সৃষ্টিকারী না হতে হবে।
তাবিজ ব্যবহার
জিজ্ঞাসা : ক. তাবিজ দিয়ে চিকিৎসা নেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে কতটুকু বৈধ?
খ. তাবিজ দিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মহব্বত সৃষ্টি করা যাবে কিনা?
হাসান আল মামুন, নারায়নগঞ্জ
জবাব : ক. একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই সমস্ত কিছু করতে পারেন। তিনিই রোগদাতা এবং তিনিই রোগ থেকে মুক্তি দান করেন । অন্তরে এ বিশ্বাস রেখে শুধুমাত্র চিকিৎসা হিসেবে অসিলাস্বরূপ শরিয়তসম্মত তাবিজ দ্বারা চিকিৎসা প্রদান করা ও গ্রহণ করা জায়েয আছে। কেননা নবী করীম সা. ও সাহাবাগণ থেকেও বিষয়টি প্রমাণিত আছে। তবে কেউ যদি তাবিজ সর্ম্পকে এ ধারণা পোষণ করে যে, তাবিজের মধ্যে রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা কিংবা বিপদ থেকে রক্ষা করার স্বকীয় ক্ষমতা রয়েছে। অথবা তাবিজ অবৈধ কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়, বা তাবিজে কুফুরী বাক্য ব্যবহার করা হয়, তাহলে এ সকল অবস্থায় তাবিজ ব্যবহার করা জায়েয হবে না।
খ. হ্যাঁ, উপরোক্ত শর্তসমূহ ঠিক থাকলে বৈধ হবে।
বুখারি শরিফ ২/৮৫৪
মাসিক বন্ধ রেখে রোজা রাখা
জিজ্ঞাসা : মহিলারা যদি রমজান মাসে কোনো ওষুধ সেবনের মাধ্যমে ঋতুস্রাব বন্ধ রাখে তাহলে ওই দিনগুলোতে রোজা রাখতে পারবে কি? এবং এতে রোজার কোনো ক্ষতি হবে কি?
ওয়ালী উল্লাহ, মোমেনশাহী
জবাব : ঋতুস্্রাব মহিলাদের একটি স্বভাবজাত বিষয় এবং ধারাবাহিক ঋতুস্্রাব আসা তাদের সুস্বাস্থ্যের কারণ। এর ব্যতিক্রম ঘটলে মহিলাদের স্বাস্থ্যেরে জন্য ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই রোজা কিংবা অন্য কোনো ইবাদত নির্বিঘেœ পালনের লক্ষ্যে ঔষধ সেবনের মাধ্যমে ঋতুস্্রাব বন্ধ রাখা ঠিক নয়। তারপরও যদি কোনো মহিলা রমজানে ঔষধ সেবনের মাধ্যমে বন্ধ রাখে, তাহলে ওই দিনগুলোতে তাকে রোজা রাখতে হবে এবং এতে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। আল বাহরুররায়েক ২/৪৪৯
তালাকের জন্য সাক্ষি
জিজ্ঞাসা : মুখে তালাক দেওয়ার সময় সাক্ষি রাখা জরুরি কি না? মোবাইল ফোনে তালাক দিলে তা শরিয়তসম্মত হবে কি না? অথবা তৃতীয় কোনো ব্যক্তি উপস্থিত না থাকলে শুধুমাত্র স্বামী-স্ত্রী মুখোমুখি হয়ে তালাক দিলে তা কি তালাক হবে?
আব্দুল্লাহ আল নোমান, গাজীপুর
জবাব : তালাক প্রদানের জন্য সাক্ষি রাখা জরুরি নয়। মোবাইলে তালাক দিলে তা কার্যকর হবে।
ফাতাওয়া আলমগিরি ১/৩৭৯
মুরাদাবা প্রসঙ্গে
জিজ্ঞাসা : এক প্রবাসী আমাকে মুরাদাবার ভিত্তিতে ব্যবসা করার জন্য ৫০ হাজার টাকা দিবে বলেছিলেন। অন্যদিকে তিনি ধান প্রদানের শর্তে কিছু লোককে ঋণ দিয়েছিলেন। এখন তিনি আমাকে বলছেন যে- ঋণ গ্রহিতাদের নিকট থেকে ধান উসুল করে তা বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে নিন। জানতে চাই এভাবে মুরাদাবার মূলধন নেওয়া বৈধ হবে কি না?
মোহা. আব্দুল্লাহ আল ফাহাদ, নাটোর
জবাব : হ্যাঁ, মুদারাবার অন্যান্য শর্ত ঠিক থাকলে এভাবে মূলধন নেওয়া বৈধ হবে।
মাবসুত ২২/২৯
মহিলাদের নামাজ
জিজ্ঞাসা : ঘর-বাড়িতে মহিলারা যখন নামাজ পড়ে তখন সেখানে অধিকাংশ সময় মাহরাম আত্মীয়-স্বজন ছাড়া অন্য কেউ থাকে না। তখনও কি তাদের ওপর পুরো শরীর ঢেকে নামাজ পড়া জরুরি?
আশরাফুল আলম, ফরিদপুর
জবাব : মহিলাদের নামাজের স্থানে মাহরাম ব্যতীত অন্য কেউ না থাকলেও তাদের মুখমণ্ডল, উভয় হাত ও পায়ের টাখনুর নিচের অংশ ব্যতীত বাকি সমস্ত শরীর ঢেকে রাখা ফরজ।
আল মুহিতুল বুরহানি ১/৩৯১
তাওয়াফে জিয়ারত
জিজ্ঞাসা : জনৈক ব্যক্তি হজ আদায়ের জন্য মক্কা মুকাররমায় গমন করে এবং আল্লাহর অনুগ্রহে হজের কার্যাবলী যথাযথভাবে সম্পন্ন করে। কিন্তু শেষ পর্যায়ে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে। যার কারণে আইয়্যামে নহর তথা জিলহজের ১০, ১১, ১২ তারিখে তাওয়াফে জিয়ারত আদায় করতে পারেনি। জানার বিষয় হলো- তাওয়াফে জিয়ারত কি আদায় করা জরুরি? না এর পরিবর্তে দম দিলেই যথেষ্ট হবে? আর তাওয়াফের নির্ধারিত সময় থেকে বিলম্বে আদায় করলে দম দেওয়া ওয়াজিব হবে কি?
মুনির হুসাইন, কিশোরগঞ্জ
জবাব : তাওয়াফে জিয়ারাত হজের অন্যতম রোকন। তাওয়াফে জিয়ারাত আদায় করা ছাড়া হজ হয় না। এমনকি এর পরিবর্তে দম দিলেও যথেষ্ট হবে না। তবে ওজরবশত তাওয়াফে জিয়ারাত নির্ধারিত সময় থেকে বিলম্বে করা যায়। সেক্ষেত্রে দম দিতে হবে না। কিন্তু কোনো ওজর ছাড়া তাওয়াফের নির্ধারিত সময়ে তা আদায় না করলে দম দেওয়া ওয়াজিব হবে।
ফাতাওয়া শামি ২/৫৫৫
দালালী প্রসঙ্গে
জিজ্ঞাসা : ১. কিছুদিন পূর্বে আমার এক বন্ধু তার কিছু জায়গা আমাকে বিক্রি করে দিতে বললো। কত টাকায় বিক্রি করবো এর একটা পরিমাণও বলে দিলো। পরে বললো এর চেয়ে বেশি টাকায় বিক্রি করতে পারলে বেশি টাকাগুলো আপনার। প্রশ্ন হলো আমি কি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে পারবো এবং বেশি টাকাগুলো আমি নিতে পারবো?
২. আর যদি সে মূল্য নির্দিষ্ট করে দেয় এবং বেশি বিক্রি করতে পারলে বর্ধিত অংশ আমার, একথা না বলে এবং আমি তা করি- তাহলে এর হুকুম কী?
মুহাম্মাদ আতাউল্লাহ, সাভার, ঢাকাজবাব : ১.২. প্রশ্নোক্ত উভয় ক্ষেত্রে আপনি বেধে দেওয়া নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে বিক্রি করতে পারবেন। তবে সেই অতিরিক্ত মূল্যের মালিক আপনার বন্ধু। আপনার জন্য তা বৈধ নয়। আর আপনার সাথে আপনার বন্ধুর কৃত চুক্তিটি না জায়েয ও ফাসিদ হয়েছে। এক্ষেত্রে আপনি আপনার শ্রমের ন্যায্য পারিশ্রমিক পাবেন। তবে কমিশন হিসেবে প্রথমে কিছু টাকা নির্ধারণ করে অত:পর এমন বলা যেতে পারে যে, যদি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশিতে বিক্রয় করতে পারো তাহলে তা তুমি পুরস্কার হিসেবে পাবে।
ফাতাওয়া আলমগিরি ৪/৪৫১
সুরা ফাতেহা
জিজ্ঞাসা : কোনো ইমাম যদি এশার নামাজে ভুলে নি:শব্দে কেরাত পড়া শুরু করে এবং সুরা ফাতেহা শেষ করার পর তার স্মরণ আসে । তাহলে এক্ষেত্রে তার করণীয় কী? সেকি সালাম ফিরিয়ে নতুন করে নামাজ শুরু করবে? নাকি যতটুকু পড়েছে তার পর থেকে জোরে পড়বে? নাকি শুরু থেকে আবার জোরে পড়বে?
আশফাক, ফরিদপুর
জবাব : প্রশ্নোক্ত অবস্থায় ইমাম সাহেব নামাজ ভেঙ্গে ফেলবে না। বরং যে পরিমাণ কিরাত নি:শব্দে পড়েছে তার পর থেকে বাকি কিরাত উচ্চস্বরে পড়বে এবং নামাজ শেষে সিজদায়ে সাহু করবে।
আন নাহরুল ফায়েক ১/৩২৫
মসজিদে একা নামাজ পড়লে ইকামত
জিজ্ঞাসা : আমি জানি যে, একাকি নামাজ পড়লে ইকামত দেওয়া উত্তম। জানার বিষয় হলো, মসজিদে একাকি নামাজ পড়ার সময়ও কি একামত দেওয়া উত্তম। এ বিষয়ে শরিয়তের বিধান কী?
আব্দুল কাদের, ঢাকা
জবাব : মসজিদে একাকি নামাজ পড়লে ইকামত দেওয়া মাকরূহ
আদ দুররুল মুখতার ১/৩৯৫
মৃতের পক্ষ থেকে বদলি হজ
জিজ্ঞাসা : জনৈক ব্যক্তি হজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে এ বছর হজ এজেন্সীর কাছে টাকা জমা করেছিলেন। গত সপ্তাহে হঠাৎ তার ইন্তেকাল হয়ে যায়। তার পক্ষ থেকে বদলি হজের জন্য প্রেরণ করা জরুরি কি না? ওয়ারিসগণ কাউকে দিয়ে বদলি হজ না করিয়ে এ টাকা নিজেরা নিতে পারবে কি না? প্রকাশ থাকে যে, মৃত ব্যক্তি হজ করার ব্যাপারে কোনো ওসিয়ত করে যায়নি।
আমিনুল ইসলাম, বানিয়াচং, হবিগঞ্জ
জবাব : প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু মৃত ব্যক্তি হজ করার ব্যাপারে কোনো অসিয়ত করে যাননি, তাই তার পক্ষ থেকে ওয়ারিশগণের ওপর কাউকে দিয়ে বদলি হজ করানো জরুরি নয়। বরং তার উক্ত টাকা এখন মিরাছ হিসাবে বণ্টন হবে। উল্লেখ্য, যদি ওই ব্যক্তির ওয়ারিছদের মধ্যে কেউ অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকে, তাহলে তার প্রাপ্ত অংশ থেকে বদলি হজে ব্যয় করা বৈধ হবে না।
ফাতাওয়া আলমগিরি ১/২৫৭
মুসাফিরে নামাজ প্রসঙ্গে
জিজ্ঞাসা : এক মুসাফির মুকিম ইমামের পিছনে নামাজ শুরু করার পর ভেঙে ফেলে। এখন তার করণীয় কী?
মাহিদ হাসান, লাকশাম
জবাব : প্রশ্নোক্ত মুসাফির ব্যক্তি পরবর্তীতে ওই নামাজ আদায় করলে দুই রাক‘আত পড়বে।
আহসানুল ফাতাওয়া ৪/৮০
কুরবানির পশুর চামড়া চুরি হয়ে গেলে
জিজ্ঞাসা : গত কুরবানিতে পশুর চামড়া বিক্রিত টাকা দান-সদকা করার পূর্বেই বাসা থেকে চুরি হয়ে যায়। তখন কেউ বলে ওই পরিমাণ টাকা আবার দান করতে হয়ে। আবার কারও মত হলো নতুন করে টাকা দিতে হবে না। জানার বিষয় হলো, কুরবানির পশুর চামড়ার বিক্রিত টাকা চুরি হয়ে গেলে তার হুকুম কী?
ইমরান চৌধুরী, নেত্রকোণা
জবাব : কুরবানির চামড়া বিক্রিত টাকা সদকা করা ওয়াজিব। আর প্রশ্নোক্ত চামড়ার টাকা দান করার পূর্বে চুরি হয়ে যাওয়ায় ওয়াজিব আদায় হয়নি। তাই আপনাকে ওই পরিমাণ টাকা দান করতে হবে।
আল বাহরুর রায়েক ২/৩৬৯জাকাত প্রসঙ্গে
জিজ্ঞাসা : আমার এক চাকুরিজীবী বোন আছে। সে মাসে যে বেতন পায় তা থেকে প্রতিমাসে এক হাজার টাকা ডি,পি এস ফাণ্ডে জমা রাখে। এখন তাতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা জমা হয়েছে। এবং তার কাছে তিন ভরি স্বর্ণ আছে। জানার বিষয় হলো, তার এ সম্পদের ওপর জাকাত আসবে কি না? যদি আসে তাহলে কত?
হাসান ইবনে মুহাম্মদ, গাজিপুর
জবাব : হ্যাঁ, আপনার বোনের উক্ত সম্পদের ওপর জাকাত আসবে। তার ডি. পি. এস ফান্ডের টাকার সাথে স্বর্ণের মূল্য যোগ করে পূর্ণ টাকার ২.৫০% জাকাত হিসেবে প্রদান করতে হবে। হেদায়া ১/১৭৪
জাকাত প্রসঙ্গে
জিজ্ঞাসা : আমি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করি। মাসিক বেতন ৯৫০০/-। আমি পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে সংসারের দায় দায়িত্ব আমার ওপর। আমার পরিবারের সদস্য সংখ্যা মোট ৮ জন। অতি কষ্ট করে চলেও আমার প্রতি মাসে সাংসারিক খরচ মোট ২০,০০০/- প্রতি মাসেই আমাকে কষ্ট করে চলতে হচ্ছে। ঋণ করে সংসার চালাতে হচ্ছে। ছোট ভাই বোনদের পড়াশোনার খরচ দিতে হচ্ছে। আমার উল্লেখযোগ্য কোনো সম্পদ, ভূমি বা স্বর্ণও নেই। বর্তমানে কোনো ঋণ নেই। ব্যক্তিগত কোনো ঘর নেই। অথচ ব্যক্তিগত ঘর করা প্রয়োজন। আমার ব্যাংক ব্যালেন্স আছে ৩১,০০০/-। এমন পরিস্থিতিতে আমি কোনো ধনি ব্যক্তি থেকে যদি জাকাত গ্রহণ করি তাহলে জায়েজ হবে কি? অথবা ধনি ব্যক্তি যদি আমকে ইচ্ছাকৃতভাবে জাকাতের টাকা প্রদান করে তা আমি গ্রহণ করতে পারবো কি? এক্ষেত্রে শরিয়তের বিধান কী?
মুদ্দাচ্ছির আলম, কলাবাগান, ঢাকা
জবাব : প্রশ্নোক্ত বিবরণ দ্বারা বুঝা যায়, আপনি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নন। বিধায় আপনার জন্য জাকাত গ্রহণ করা জায়েয হবে।
আদ দুররুল মুখতার ২/২৫৯পড়ার অযোগ্য কুরআন শরিফের হুকুম
জিজ্ঞাসা : কুরআন শরিফ ও হাদিসের পুরাতন ছেঁড়া পাতা যা পড়ার উপযোগি নয় এগুলো কি করতে হবে? মাটিতে দাফন করে রাখা হবে? না আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিতে হবে? দলিলের আলোকে জানতে ইচ্ছুক। মসজিদ কমিটি, রায়ের বাজার ঢাকা।
জবাব ঃ কুরআন, হাদিস ও অন্যান্য ধর্মীয় পুস্তকাদি ছিঁড়ে গেলে অথবা পড়ার অনুপযোগী হলে সেগুলোর হেফাজতের উদ্দেশ্যে কোনো পবিত্র কাপড়ে পেঁচিয়ে সংরক্ষিত কোনো স্থানে অথবা কবরস্থানের এক কোণে, (যেখানে মানুষ বা জীবজন্তুর চলাচল একেবারেই নেই অথবা খুব কম) মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার ন্যায় দাফন করে দিবে। যাতে এগুলোর মর্যাদাহানী না হয়। এটিই সর্বোত্তম পদ্ধতি।
এছাড়াও এ জাতীয় কপিসমূহকে কোনো ভারী জিনিষের সাথে বেঁধে গভীর পুকুর বা নদীতে ডুবিয়ে দেয়া যেতে পারে। যাতে সেগুলো নদী বা পুকুরের গভীরে পৌঁছে যায়। এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন কোনো অবস্থাতেই এগুলোর অবমাননা না হয়।
আর যদি উল্লেখিত দুটি পদ্ধতি কঠিন হয়ে পড়ে অথবা দাফন করা ও পানিতে ডুবিয়ে দেয়ার পরও পবিত্র কুরআন ও ধর্মীয় কিতাবাদির যথাযোগ্য মর্যাদা রক্ষা না হয়, তাহলে হেফাজতের উদ্দেশ্যে আগুন দ্বারা জ্বালানোরও অবকাশ আছে। জ্বালানোর পর ছাইগুলোকে দাফন করে দেয়া অথবা পানিতে ফেলে দেয়া যেতে পারে।